জেলার বাসিন্দা না হয়েও তথ্য গোপন করে রতন কুমার দাশ নামের বহিরাগত একব্যক্তি চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্সে চাকুরি করে যাচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। এমনকী ভূয়া জাতীয়তা সনদে ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নীরব ভূমিকায় বহাল তরবিয়তে চাকুরি করে স্বাস্থ্য সহকারি পদে থেকে তিনি বর্তমানে স্বাস্থ্য পরিদর্শক পদে পদোন্নতিও পেয়েছেন। সর্বশেষ গত ২৯ মে কিছু দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আর্শিবাদে কারণে তিনি স্বাস্থ্য পরিদর্শক চকরিয়ার ইনচার্জের দায়িত্বটিও পেয়ে যান। এঘটনায় চকরিয়া উপজেলায় কর্মরত স্বাস্থ্য সহকারি, সহকারি স্বাস্থ্য পরিদর্শক, স্বাস্থ্য পরিদর্শক সহ হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে চরম অসুন্তোষ বিরাজ করছে।
এদিকে সদ্য ইনচার্জের দায়িত্বপ্রাপ্ত রতন কুমার দাশকে ওই পদ থেকে না সরালে কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার হুমকি দিয়েছেন কর্মরত স্বাস্থ্য সহকারিরা।
অভিযোগে জানা যায়, স্বাস্থ্য পরিদর্শক রতন কুমার দাশের নিজ বাড়ি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায় হলেও তিনি প্রকৃত ঠিকানা গোপন করে চকরিয়া উপজেলার লক্ষ্যারচর ইউনিয়নের হিন্দুপাড়ার বাসিন্দার ভূয়া জাতীয়তা সনদ দাখিল করে ১৯৮৮সালে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্য সহকারি পদে যোগদান করেন। তিনি বড় ধরণের তথ্য গোপন করে দূর্নীতির আশ্রয় নিয়ে এবং স্থায়ী বাসিন্দার কোটা ভঙ্গ ও সরকারি নিয়ম নীতি তোয়াক্কা না করে চাকরি নিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। পাশাপাশি পদোন্নতিও পেয়েছেন। ফলে সে অবৈধ নিয়োগ পাওয়ার কারণে জেলার অন্য একজন ব্যক্তি চাকুরি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। তিনি জেলার স্থানীয় বাসিন্দাদের মৌলিক অধিকারহরণ করে সরকারের আইনের পরিপন্থি কাজ করেছে। অথচ সরকারী নিয়ম রয়েছে তথ্য গোপন করে কেউ চাকরি করলে তার শাস্তির বিধান রয়েছে। কিন্তু রতন কুমার দাশ দীর্ঘ ২৮বছর ধরে বহাল তরবিয়তে চাকরি করে গেলেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন রহস্যজনক কারণে নিরব ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন। তিনি ওই পদে আশীন হয়ে বিভিন্ন অনিয়ম ও দূর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছেন। তার অধিনস্থ কর্মচারীদের প্রতি অশালিন আচরণ করে থাকেন। মাঠপর্যায়ে অধিকাংশ স্বাস্থ্য সহকারি সুনামের সহিত কাজ করলেও অনেক সময় ওই পরিদর্শক টাকার জন্য তাদেরকে নানা ভাবে হয়রানি করে থাকেন বলে অভিযোগ রয়েছে। সবচেয়ে তার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে, তিনি সরকারি বরাদ্দকৃত ওষুধ ফার্মেসীতে বিক্রি করে দেন। এসব কারণে তাকে কর্তৃপক্ষ টেকনাফ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বদলিও করলেও একবছর পূর্বে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে পূনরায় চকরিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ফিরে আসেন। এতে তিনি আরও বেপরোয়া হয়ে অনিয়ম ও দূর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ছেন। তার এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে কাউকে তিনি পাত্তাও দেন না। আরও অভিযোগ রয়েছে, বর্তমানে চকরিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চার জন সিনিয়র স্বাস্থ্য পরির্দশক রয়েছে। কিন্তু রহস্যজনক কারণে এই চারজনকে ডিঙ্গিয়ে কিভাবে তিনি গত ২৮মে চকরিয়ার ইনচার্জের দায়িত্ব পেলেন। এ প্রশ্ন এখন সচেতন মহলের মুখে মুখে। রতন দাশের বিরুদ্ধে অভিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে আন্দোলনের যাওয়ার হুমকি দিচ্ছেন কর্মরত স্বাস্থ্য সহকারিরা। সে অবৈধভাবে চাকরি করার অপরাধে পাঁচ বছর পূর্বে পূর্ববড়ভেওলা এলাকার সরওয়ার আলম নামের একব্যক্তি বাদি হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেছিলেন। ওইসময় তার বিরুদ্ধে নিয়ম বর্হিভূতভাবে চাকরি পাওয়ার বিষয়টি বেশকিছু জাতীয় ও আঞ্চলিক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিলো। ইতোপূর্বে চাকরি বঞ্চিত চকরিয়ার একাধিক ব্যক্তি তার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এব্যাপারে তার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্ঠা করেও মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। ##
পাঠকের মতামত: